সি এন ডেস্ক :::
বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলের নাজিরারটেক পয়েন্টে পোনাবাহী এক কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে বিমানের ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে পাইলট। নিখোঁজ রয়েছেন আরো দু’জন। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পোনা নিয়ে কক্সাবাজার বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমানটি। আহত পাইলটকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিখোঁজ খোঁজে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মোহন্ত জানান, পোনা বোঝাই করে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে রওয়ান দিয়ে সাগরের নাজিরারটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। এতে নিহত ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হলেন কুলিশ নোলরী, আহত পাইল হলেন গাটারভ ওয়াদ। নিখোঁজ দু’জন হলেন বিমানের নেভিটের কালটুরভ, কো-পাইলট জুলুডিমির। তারা চারজনই ইউরোপিয়ান। মেশিনের ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিমানবন্দরের এই ব্যবস্থাপক।
স্থানীয় কাউন্সিলর আকতার কামাল জানান, কক্সবাজার উপকূলের নাজিরার টেকের প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি বিধ্বস্তের হওয়ার ঘটনা নজরে এলে তাৎক্ষণিক মাছ অন্তত অর্ধশত বোট নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও জেলেরা দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তাদের সাথে যোগ দেন কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী। তারা প্রায় দেড়ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে দু’জনকে উদ্ধারকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়া কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিধ্বস্ত হলেও বিমানটি ভাসমান অবস্থায় ছিল। তবে বিমানের কয়েকটি অঙ্গাংশ অনেকটা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দেখা গেছে। এর ভেতর থেকে দু’জনকে উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স উপ-সহকারী পরিচালক জসীম উদ্দীন জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করেন। উদ্ধার করে তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নোবেল কুমার বড়–য়া জানান, হাসপাতালে আনার বেশ আগেই ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার কুলিশ নোলরী মারা যান। আহত পাইলট গাটারভ ওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথায় ও ডান পা’য়ে গুরুতর আঘাত রয়েছে। তার মাথা ও পায়ের অপারেশন করতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের তত্ত্বাবধানের তার চিকিৎসার চলছে।
‘ট্রু ভিশন’ নামে পোনাবাহী কার্গো বিমানটি পরিচালা করতেন মহেশখালী-কুতুবিদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক। এই কার্গো বিমানে করে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে কক্সবাজার থেকে খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন জেলায় পোনা পরিবহন করে আসছিলেন।
বিধ্বস্ত বিমানের পরিচালক গিয়াস উদ্দীন জানান, নিখোঁজ দু’জনের খোঁজে দুুপুর ১২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিল কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। একই সাথে বিধ্বস্ত বিমানটিও কূলে তুলে আনার চেষ্টা চলছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, নিহত ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ারের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের রাখা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: